সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ

রাসূলের শানে হাসান আলীম-এর একগুচ্ছ সনেট

প্রথম নক্ষত্র

নিষ্প্রভ আকাশে জ্বলে উঠেছিলো সেদিন প্রথম

একটি মাত্র সে নক্ষত্র জ্বলজ্বলে পূণ্যপ্রভা জ্যোতি,

অবাক বিস্ময়ে ফুটে উঠেছিল শুদ্ধতম মতি

নক্ষত্র কাননে যেন ফুটেছিল কেতকী কদম।

অবাক বিস্ময়ে শুধু বলেছিল প্রথম মানুষ

কে এই পূর্ণিমা দ্যুতি সুধাময় মধুমতী নদী

আলোকিত করে দিচ্ছে তারালোক পৃথিবী অবধি,

নিরন্তর স্রোতস্বীনি জীবনের অরণি পুরুষ।

যদি তাঁর পুণ্যময় জীবনের না হত প্রকাশ

পূর্ণালোক পেত না এ অন্ধকার জগত সংসার,

গভীর আঁধারে ডুবে সর্পকুলে ভরপুর হত,

তুমি তাই জীবনের আলোকের আলো হযরত,

তোমাতে সঁপেছি প্রাণ তুমি শুধু কেবল আমার

তুমিই আমার প্রাণ অনুধ্যেয় জীবন নির্যাস।

শুক্লাতিথি

সমস্ত প্রকৃতি আজ অভিভূত অনন্ত অধীর

সমস্ত কানন বৃন্ত পুষ্পময় শত অলিকুল

সমস্ত সৃষ্টিজগত সাড়ম্বর অনন্ত অস্থির

সমস্ত নক্ষত্র চাঁদ বাঁধ ভাঙা জোসনায় আকুল।

আজ সেই প্রতীক্ষিত সুন্দরের শুভ আগমন

আজ সেই জ্যোতির্ময় নক্ষত্রের আত্ম উন্মোচন

আজ সেই নির্ঝরের প্রাণ সিক্ত পুষ্প প্রস্রবণ

আজ সেই পূর্ণতার শুক্লা তিথি পূতপণ্যক্ষণ।

সমস্ত প্রকৃতি থেকে ধ্বনি ওঠে প্রিয় মুহাম্মদ

সমস্ত কলম লেখে মুহাম্মদ অমর সবিতা,

সমস্ত চেতনা জুড়ে মুহাম্মদ অনন্য কবিতা

সমস্ত হৃদয় থেকে ঝরে নদী প্রিয় মুহাম্মদ।

একটি মাত্র নামে আমি আজন্ম আউল উন্মাতাল

আমার দেহের প্রতি জীবকোষে মীম হে মীম দাল।

ফারানের ফুল

ফারানের ঐ গুলবাগিচায় ফুটলরে ফুল শাহান শাহা,

যে ফুলের ঐ নুরের রেশে চমকে যায় শাম জাহান

সারা,

মা আমিনা চাঁদ পেল রে নৃত্য করে গ্রহ তারা,

ছন্দ দোদুল মুগ্ধ আকুল এ কোন কোকিল কুহু কাহা।

পড়ছে ভেঙে একে একে মিথ্যা কালো মূর্তি বাহার,

কাবার ঘর ফের উঠছে রেঙে এ কোন মধুর ফূর্তি আহা

পড়ছে লুটে একে একে সব শোষকের কারার দুয়ার

মুক্তি পাবে সর্বহারা মজলুমেরা দেখ সে রাহা।

স্বর্ণগিরি পুঁজির পাহাড় ভাঙছে রে কার ডরে মড় মড়

দুনিয়ার সব জালিমেরা কাপছে ভীষণ পাপে থরথর।

কার আলো তে পালায় আঁধার, কার আলো তে জগত আলো,

কার নামে তে আকাশ থেকে নামছে খুশির রূপের ঢলও,

সে নাম সেরা মখলুক জুড়ে সে নাম প্রিয় নূর মুহাম্মদ

আশেকে দিল সাগরও নীল উথলে ওঠে বুকের শহদ।

চল্লিশ বসন্তে

হেরা পর্বত গহ্বরে মুহাম্মদ একাকী নিভৃতে

পরম প্রভুর ধ্যানে নিমজ্জিত আনন্দ বিদ্যুৎ

পুষ্পল চাঁদ হৃদয়ে মূর্ত হল পূতপুণ্য চিতে,

উজ্জ্বল জ্যোতিস্কসম জিবরাইল আল্লাহর দূত।

পড়ুন প্রভুর নামে ' মেলে ধরে রেশম ব্যানার।

অবাক বিস্ময়ে তাঁর ঝরে পড়ে উষ্ণ অক্ষমতা

আলিঙ্গনে উপ্ত করে প্রেমময় বাণীর মমতা,

অতঃপর মুক্ত হল রুদ্ধ কণ্ঠ আনন্দ নির্ঝর।

কম্প্র কণ্ঠে মুহাম্মদ বিবৃত করেন খাদিজাকে।

দৃঢ় প্রত্যয়ে খাদিজা ঘোষণা করেন এ যুগের

তিনিই মহান নবী। বিজ্ঞ ওয়ারাকা বলে তাঁকে

ভাতিজা নিশ্চিত জেন, নবী তুমি সর্ব মানুষের।

চল্লিশ বছরে হল পূর্ণতার স্বর্ন আবির্ভাব

চল্লিশ কসুমে করে মুহাম্মদ নবুয়ত লাভ।

কাবার চাদর

প্রিয়তম জন্ম ভূমে আর বুঝি তেষ্টানো যাবে না

আঙুর খেজুর বীথিবন বলাকার সন্নিধানে

শ্যামল সবুজ বুকে মাতৃস্নেহ পূত দুগ্ধ পানে

তৃপ্ত হতে ঘাতকেরা আর বুঝি সময় দেবে না।

কাফেরেরা ছলা করে নদোয়ার গোপন বৈঠকে,

ঘোষণা করেছে তাঁকে অবাঞ্ছিত, মৃত্যু পরোয়ানা

জারি করে হায়ানেরা, তলোয়ার হাতে দিচ্ছে হানা,

লক্ষ দীনারের লোভ ভীষণ তাণ্ডব চারদিকে।

আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে মুহাম্মদ অশ্রু সিক্ত মনে

জন্মভূমি ছেড়ে যান বহুদূরে রাত্রির বিবরে,

বারবার ফিরে চান তবু প্রিয় মাতৃভূমি পানে,

ব্যথার আকিকে কাপে সাগরিক বেদনা নির্ঝরে।

শূণ্য মনে বারবার দোলা দেয় কাবার চাদর

মায়াবী রুমাল মা'র করুণার শিশির আদর।

হৃদয় রসূল

মদীনার ঘরে ঘরে পৌঁছে গেল যুদ্ধের বারতা

ওহুদের ভয়াবহ দুঃসহ সংবাদ চারিদিকে,

প্রিয়জন হারানোর চাপাকান্না জম হয় বুকে

জিজ্ঞাসিছে জনে জনে নারী এক রাসূলের কথা,

কেমন আছেন তাঁর প্রিয়তম হৃদয় রাসূল!

শহীদ হয়েছে তার পিতা, যুদ্ধ ফেরা সাহাবীরা

বলে তাকে,সে কথায় নারী তবু হল না ব্যাকুল

রাসূলের জন্য শুধু পেরেশানি, প্রাণান্ত অধীরা।

পুনর্বার বলা হল, শহীদ হয়েছে ভ্রাতা তার

রমণীর কণ্ঠ থেকে ঝরে শুধু রাসূল দরদ,

অবশেষে বলা হল, শহীদ হয়েছে পুত্র স্বামী,

শিহরিত হল না সে নারী,প্রশ্ন তার বারবার

কি খবর রাসূলের? হৃদরন্ধ্রে প্রেমের শহদ

পিতা পুত্র ভ্রাতা স্বামী নবী থেকে নয় প্রিয়, দামী।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর