সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ ভিডিওচিত্র ২

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন। রোববার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৩৯ ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ তার আগমনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

শারীরিক অবস্থা ও আগমনের দৃশ্য

বিমান থেকে হুইলচেয়ারে করে নামানো হয় সাবেক রাষ্ট্রপতিকে। তার পরনে ছিল একটি শার্ট ও লুঙ্গি; মুখে ছিল একটি সাদা মাস্ক। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, তিনি ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত চেহারায় দেখা গেছেন। রাত ১টা ৪৫ মিনিটে ইমিগ্রেশন কাউন্টারে পৌঁছান তিনি, এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে। রাত ২টা ৪৫ মিনিটে তিনি ইমিগ্রেশন শেষ করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার ও শ্যালক ডা. আ ন ম নৌশাদ খান।

বিতর্কিত বিদেশযাত্রা

এর আগে ৮ মে দিবাগত রাত ৩টায় চিকিৎসার উদ্দেশে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন আবদুল হামিদ। তবে তার এই বিদেশযাত্রা নিয়ে শুরু থেকেই তৈরি হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। কারণ, তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলার বিষয়টি তখন সামনে আসে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং ওবায়দুল কাদেরের নামও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার ১০ মে আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পাশাপাশি ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহসিনা আরিফসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন মো. আবদুল হামিদ। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময় তিনি দেশে অবস্থান করছিলেন।

তার বিদেশ যাত্রাকে কেউ কেউ “পলায়ন” হিসেবে উল্লেখ করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলছেন, তার বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়নি এবং চিকিৎসার উদ্দেশ্যেই তিনি দেশত্যাগ করেছিলেন।

বর্তমান অবস্থা ও পরবর্তী পদক্ষেপ

দেশে ফেরার পর সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন, তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি। তবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব শেষ হওয়ার পর তিনি রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকার একটি বাসায় বসবাস করছিলেন বলে জানা গেছে।

সরকার গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি তার বিদেশযাত্রা ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক বিষয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে কিশোরগঞ্জের মামলাটি কীভাবে এগোয়, সে দিকেও রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর নজর রাখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর