সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ

নতুন বইয়ের ঘ্রাণ প্রতিটি শিক্ষার্থীর অমিত ভালোবাসার টান। কিন্তু সে বই এবারও সময়মতো পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। গত বছরের মন্দ অভিজ্ঞতা দূর করতে আগেভাগে কাজ শুরু করেও বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই দেওয়া নিয়ে শঙ্কা করা যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের হঠাৎ পুনর্বিজ্ঞপ্তির আদেশে এবার বই ছাপার কাজে বড় বাগড়া পড়েছে। বছরের শেষ প্রান্তে এসেও মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণের কাজই এখনো সম্পূর্ণ ভাবে শুরু করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগামী বছর নতুন বই পেতে পেতে মার্চ মাস পার হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানান, নভেম্বরের শুরুতে কেবল একটি শ্রেণির বই ছাপার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরো তিনটি শ্রেণির বই ছাপার কিছুই শুরু হয়নি। এছাড়া সেগুলো শুরু করতেও আরও কিছুদিন লাগতে পারে বলে জানা গেছে। এই তিন শ্রেণির বইয়ের দরপত্র মন্ত্রণালয় কারণ ছাড়া আটকে দেওয়ার ফলে এই সংকট।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, মাধ্যমিকের জন্য মোট ২১ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ৩০০ কপি বই ছাপানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নবম শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা ৫ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ২৮ কপি, যা ২৩৪টি লটে ভাগ করা হয়েছে। চুক্তির পর ৭০ দিনের মধ্যে এই বই ছাপা শেষ করার সময়সীমা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫১ লাখ ৭৪ হাজার ফর্মা ছাপানো হয়েছে। আর বাইন্ডিং (বাঁধানো) সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৫৪ হাজার কপি। অর্থাৎ মাত্র এক শতাংশ। বর্তমানে ২২১টি লটে কাজ চলছে, ১৩টি লট নন-রেসপনসিভ থাকায় পুনঃদরপত্রে পাঠানো হচ্ছে।

এনসিটিবি জানায়, নবম শ্রেণির বইয়ের নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (নোয়া) জারি হয়েছে ২৭ অক্টোবর। নোয়ার পর ছাপাখানা মালিকরা চুক্তির জন্য ২৮ দিন সময় পান। নির্ধারিত সময়ে চুক্তি করলেও ছাপানো শুরু করতে ডিসেম্বর যাবে। এরপর ছাপানোর জন্য এনসিটিবি আরও ৫০ দিন সময় দিয়েছে তাদের। এতে জানুয়ারি মাস তারা ছাপানোর জন্য পাবেন। এছাড়াও বই বাঁধায়, ট্রাকে জেলা-উপজেলায় পৌঁছে দিতেও অনেক সময় লেগে যায়। অন্যদিকে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম পর্যন্ত তিন শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার কার্যক্রম শুরু হয়নি এখনো।

আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সব রাজনৈতিক দল। জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে দেশের সব প্রেসে এক ধরনের চাপ শুরু হবে। এদিকে তিন শ্রেণির বই ছাপার চুক্তি এখনো করতে পারেনি এনসিটিবি। ফলে নির্বাচনের চাপে বই ছাপার কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা করছেন অনেকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রেস মালিক বলেন, নির্বাচনের কাজের দাম বেশি থাকে ফলে বেশির ভাগ ছাপাখানার মালিক সেসব কাজে মনযোগী হবে। যেটির প্রভাব বই ছাপার কাজে পড়বে। সব মিলিয়ে এবার বই পেতে লম্বা দেরী হতে পারে।

এনসিটিবির একজন শীর্ষ কর্তকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা বছরের শুরু থেকেই বইয়ের কাজ নিয়ে ভাবছিলাম। শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো বই পৌঁছে দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয় কোনো কারণ না দেখিয়ে কয়েকটি শ্রেণির বইয়ের দরপত্র আটকে দেয়। পরে আবার পুন:দরপত্র প্রকাশ করাসহ বিভিন্ন ফরমালিটিস মেইনটেইন করতে দেরী হয়ে যাচ্ছে। এবারের বই ছাপার কাজে দেরীর জন্য মূল দায়ী মন্ত্রণালয়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবির চৌধুরীকে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর