সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ

ঢাকা হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভয়াবহ আগুন পাঁচ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টা নাগাদ আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট কাজ করছিল। দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কুরিয়ার সেকশনে আগুনের সূত্রপাত হয়।

এদিকে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বিকেল ৫টায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মাদ কাউছার মাহমুদ। তিনি জানান, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।

তবে কাউছার মাহমুদ যখন বিজ্ঞপ্তি পাঠান সেই সময় কার্গো ভিলেজের উত্তর পাশের দ্বিতীয় তলায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। সেই অংশে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি গাড়িকে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে।

শনিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে আগুন লাগে। তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনসহ বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট কাজ শুরু করে। এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। এদিকে এই ঘটনায় সব রুটের ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

সড়কে তীব্র যানজট: সরেজমিনে দেখা যায়, বনানীর কাকলি থেকে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কার্যালয় পর্যন্ত যানজট। সড়কের যাত্রীরা হেঁটে রওনা দিয়েছেন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন বিদেশগামীরা। নিজের ল্যাগেজ নিয়ে বিমানবন্দরে গেলেও দুটি গেইট বন্ধ থাকায় কেউ ভেতরে যেতে পারছেন না।

যানজটে আটকে পড়া যাত্রীরা জানাচ্ছেন, মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। এতে বিমানযাত্রী ও সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

বিদেশগামী আব্দুল মতিন বলেন, আজ আমার ফ্লাইট আছে। যাব দুবাই। এরই মধ্যে শুনলাম এয়ারপোর্টে নাকি আগুন লাগছে। বিমান চলাচল স্থগিত থাকলেও আমাকে বিমানবন্দরে যেতে হবে। কারণ ঢাকায় থাকার মতো কোনো জায়গা নাই।

বাইক রাইডার রাকিব জানান, এয়ারপোর্টে যাবেন, কিন্তু যানজটের কারণে যেতে পারছেন না। আটকা পড়েছেন রাস্তায়। কতোক্ষণ এই পরিস্থিতিতে থাকতে হবে, কী করবেন তিনি বুঝতে পারছেন না।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৫ হাজার পুলিশ : আগুন লাগার ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাঁচ হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরার উপকমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম। শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান ডিসি।

মহিদুল ইসলাম বলেন, যারা কার্ডধারী তাদেরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। তবে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারছেন না। ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পাঁচ হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করছে। এছাড়া উত্তরা বিভাগের ছয়টি থানার পুলিশ সদস্যদের যুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা কাজ করছে বলে জানান তিনি।

ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ: বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানায়, অগ্নিকাণ্ডের কারণে শাহজালালে সব ধরনের বিমান ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। ঢাকাগামী কিছু ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ জানান, কার্গো সেকশনের পাশে একটি অংশে আগুনের সূত্রপাত হয়। যেই সেকশনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে আমদানি করা পণ্য মজুদ রাখা হয় বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর