সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মাঠ প্রশাসনে বড় রদবদল আসবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নির্বাচন ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘বৈঠকে মাঠ পর্যায়ে সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলির বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজ নিজ প্রেক্ষিতে কাজ করছেন। পরবর্তীতে যখন নির্বাচনের তফসিল হবে, সেসময় প্রয়োজন হলে, ইসি উদ্যোগ নেবে।’

ইসি সচিব বলেন, ‘অবাধ ও সুন্দর নির্বাচন করতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি রাস্তাঘাট ঠিক করতে। যাতে ভোটারদের যাতায়াতে সমস্যা না হয়। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মধ্যে ভোটকেন্দ্রের অবকাঠামো ঠিক করা হবে।

আখতার আহমেদ বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা এখানে থাকবে। দুর্গম এলাকাতে হেলিপ্যাড তৈরি করার কথা বলেছি। সংশ্লিষ্ট বিভাগ এগুলো করবে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভিসাপ্রাপ্তির যেন কোনো ঝামেলা না হয় তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখবে।

ইসি সচিব আরও বলেন, ঋণখেলাপীদের সঠিক তথ্য চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে একটু সময় যাতে দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত যানবাহন যাতে ব্যবহার করা না হয় তা আলোচনা করা হয়েছে।

ভোটের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ের আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আখতার আহমেদ বলেন, তফসিল ঘোষণা পর থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করলেও আমরা কিন্তু বলেছি তারা যাতে প্রথম থেকে কাজ করেন। যাতে আচরণবিধি সঠিকভাবে প্রতিপালন হয়।

পরীক্ষা ও নির্বাচন যেন একসঙ্গে না পড়ে সেদিকেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হওয়ায় পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যাতে পরীক্ষা নির্বাচনের সময় না থাকে। বিদ্যুতের প্রবাহ সচল রাখতে বিদ্যুৎ বিভাগকে বলা হয়েছে। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের বিষয়ে আমরা বিস্তারিতভাবে ব্যাখা করেছি। যাতে নির্বাচন সঙ্গে জড়িত সকলে ভোট দিতে পারে। এজন্য তারা ব্যবস্থা নেবে। ১৬ নভেম্বর জণগণের জন্য এ সংক্রান্ত অ্যাপ উন্মুক্ত করা হবে।’

ইসি সচিব আরও বলেন, ‘এআইয়ের অপপ্রচার রোধে এনটিএমসির অ্যাপ ‘সফল ব্যবহার করার কথা আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি একটা সেল গঠন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজেটের ব্যাপারে সবাই কথা বলেছেন প্রচার প্রচারণার সঙ্গে বাজেটের ব্যাপারটা আছে তো সবাই সবার জায়গা থেকে আমাদের জানাবে। আমরা বলেছি যে বাজেটের ব্যাপারে সাশ্রয়ী হতে হবে।’

আখতার আহমেদ বলেন, ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বলা হয়েছে। আমরা বলেছি তফসিল ঘোষণার শুরু থেকে তারা যেন পূর্ণ মাত্রায় কাজ করেন, যাতে আচরণবিধি প্রতিপালন হয়। প্রয়োজনীয় পরিমাণ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রভিত্তিক মেডিকেল টিম রাখার কথা বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে নৌযান চলাচলে বন্ধ রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

ইসি কোন বিধির আলোকে শাপলা কলি প্রতীক যুক্ত করে প্রতীকের তালিকা সংশোধন করল-এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “এটা ইলেকশন কমিশন মনে করেছে যে শাপলা কলিটা রাখা যেতে পারে। এটা কারোর দাবির বিষয় প্রাসঙ্গিক না। কারণ আপনারা জানেন এনসিপি শাপলা প্রতীকটা চেয়েছে। শাপলা ও শাপলা কলির ভেতরে পার্থক্য আছে। এটাও আমার মনে হয় ব্যাখার অবকাশ রাখে না।”

আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিলটা সংশোধন করেছি। কিছু কিছু প্রতীক নিয়ে কিছু মন্তব্য আমরা শুনেছি যেমন কেউ বলেছে, এটা রাখলে কেন, না রাখলে ভালো হতো, রাখা যৌক্তিক হয়েছে কিনা ইত্যাদি। এই বিবেচনায়, আগে যে ১১৫টা প্রতীক ছিল, সেখান থেকে আমরা ১৬টা প্রতীক বাদ দিয়ে নতুন করে প্রতীক নিয়ে ১১৯টা প্রতীক এবার শিডিউল করেছি।’

ইসি ভুল সংশোধন করল কি না ও কেন সময়ক্ষেপণ করল-জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘আমি বারবার বলছি যে কিছু প্রতীক সম্পর্কে বিরূপ মতামত ও মন্তব্য এসছে। ওভার দ্যা পিরিয়ড অফ টাইম, কোন একটা পর্যায়ে কমিশন মনে করেছে, এটা সংশোধন করলে করা যেতে পারে। সেই হিসেবে সংশোধন হয়েছে। ব্যাপারটা এখন আর তখনের নয়। কমিশন দরকার মনে করেছে, করেছে। যদি ভবিষ্যতে প্রয়োজন হয় আবার সংশোধন করবে। এটা তো কোন স্ট্যাটিক বিষয় না। কোনো আইন বিধির প্রয়োজন হয় না…। এখানে নতুন করে বিতর্কের যোগ দেখছি না।”

হ্যান্ডশেকের মতো প্রতীক নতুন করে তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, এটা বাস্তবসম্মত কিনা- জানতে চাইলে আখতার আহমেদ এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, “আপনি যদি বলেন, এটা কেন করা হলো, ওটা কেন করা হলো না এর জবাব তো মুশকিলের ব্যাপার। কেন এটাকে রাখা হলো না, কেন ওইটাকে রাখা হলো, এটা তো আপেক্ষিক প্রশ্ন।”

প্রতিদিন ইসিতে বিভিন্ন দল আসছে দাবি নিয়ে, এটাকে ইসি চাপ মনে করছেন কি না- জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচনের তিনটা মূল ধারা। একটা হচ্ছে রাজনৈতিক দল, আরেকটা ভোটার এবং নির্বাচন কমিশন নিজেই। এই তিনটা একটা আরেকটার সঙ্গে ইন্টার্যাক্ট করতেই আসবে। আর করতে আসার অর্থই এই না যে আমরা চাপের মধ্যে আছি। এটা চিন্তা করাটা অত্যন্ত অমূলক।”

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর