সেনাবাহিনীতে জাতি-রাজনীতি নয়, কেবল লড়াই ওয়েস্ট পয়েন্টে ট্রাম্পের বার্তা
২০২৫ সালের স্নাতক সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়েস্ট পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন, সামরিক একাডেমি থেকে ‘সমালোচনামূলক জাতিতত্ত্ব’ (Critical Race Theory) সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা হবে। তাঁর কথায়,
আমরা বিভ্রান্তি দূর করছি, আমাদের সেনাবাহিনীকে তার প্রকৃত লক্ষ্যে—আমেরিকার প্রতিপক্ষকে পরাজিত করায় এবং আমাদের মহান পতাকাকে রক্ষা—এটাই হলো আসল কাজ। ট্রাম্প আরও বলেন, “গত দুই দশক ধরে উভয় দলের রাজনৈতিক নেতারা আমাদের সৈন্যদের এমন মিশনে পাঠিয়েছে যা ছিল ‘জাতি গঠনের ধর্মযুদ্ধ’—আমাদের স্বার্থে নয়; এটা কখনো হওয়া উচিত ছিল না।
DEI প্রোগ্রামের শেষ অধ্যায়
২০১৭–২১ মেয়াদে প্রথম নির্বাহী আদেশে DEI (বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি) নীতিকে সামরিক বাহিনীমূলক পরিষ্কারে নির্দেশ দেন ট্রাম্প। এবার ‘দ্বিতীয় নির্বাহী আদেশে’ তিনি পুনর্বার DEI উদ্যোগ বন্ধ করে দেন এবং প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথকে এ উদ্যোগের অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা চালাতে নির্দেশ প্রদান করেন।
ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট পয়েন্ট কর্তৃপক্ষ তুলে দেয় ডজনখানেক ক্যাডেট ক্লাব—যাতে ছিল এশিয়ান প্যাসিফিক ফোরাম, ন্যাশনাল সোসাইটি অব ব্ল্যাক ইঞ্জিনিয়ার্স ও সোসাইটি অফ উইমেন ইঞ্জিনিয়ার্স কনসার্টিয়াম। ক্রমান্বয়ে বৈচিত্র্য-ভিত্তিক সকল সংগঠন বন্ধ করা হচ্ছে, যাতে সেনাবাহিনীর মনোযোগ শুধুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি মোকাবেলায় সংযত থাকে, এমনটাই তাদের যুক্তি।
শান্তিকালীন নিয়োগে রেকর্ড” দাবি ট্রাম্পের
ট্রাম্প তাঁর বক্তৃতায় ন্যাশনাল গার্ডের ভূমিকাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। করোনাকালের নিয়োগ সংকট কাটিয়ে সামরিক বাহিনীতে নতুন শান্তিকালীন নিয়োগের রেকর্ড গড়া হয়েছে, দাবি তার। গত বছর বাইডেন প্রশাসনের ছিল সবচেয়ে খারাপ; অথচ এক বছরেরও কমে আমরা সেই নিয়োগ ঘাটতি কাটিয়ে দিয়েছি।
ট্রাম্প স্পষ্ট করেন, পরের দিন তিনি আর সেনা পাঠানোর আগে নির্দেশিত লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে চান: নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া আমরা আর কাউকে কোনো যুদ্ধে পাঠাবো না। স্মৃতিদিন উপলক্ষে টনক নাড়িয়ে তুলে আনেন মেজর মেগান ম্যাকক্লং এর ত্যাগের কথা—যিনি ইরাকে শহিদ হন।
স্নাতকদলকে প্রেরণা
উল্লেখ্য, এই স্নাতক শ্রেণিতে ছিল ১,০০২ জন ক্যাডেট; ১৪ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী- যারা কসোভো, কাতার ও পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে সহ শিক্ষাপ্রাপ্ত। ট্রাম্প তাঁদের প্রতি সংকল্প করেন,
আপনাদের প্রশিক্ষণ ও শপথই আমেরিকার নিরাপত্তার ভিত্তি।
অন্যদিকে, গতবছর জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিতে বক্তব্য দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন; যেখানে তিনি ইউক্রেন ও ইসরাইল-হামাস সংঘাতে স্বৈরাচার বিরোধিতা করেন এবং স্নাতকদের স্মরণ করিয়ে দেন, তাঁদের শপথ “কোনো দলের নয়, সংবিধানের প্রতি”।
এই বক্তৃতা–আদেশগুলো মার্কিন সামরিক নীতি ও একাডেমিক পাঠক্রমে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। সেনাবাহিনীর মূল চরিত্র ও উদ্দেশ্য সংরক্ষণ করতেই ট্রাম্পের এ উদ্যোগ; তবে বিতর্কিত DEI বিলুপ্তি ও CRT নিষিদ্ধকরণ নিয়ে সামরিক মহলে ইত্যাদি বিতর্ক অব্যাহত থাকবে।