সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ ভিডিওচিত্র ২

মাত্র ১৭ বছর বয়সী আরিয়ান আসারি ছোটবেলা থেকেই বিমানের প্রতি ছিল গভীর আগ্রহ। আকাশে বিমান দেখলেই ঘর ছেড়ে দৌড়ে বেরিয়ে যেত সে। বাবার ভাষায়, বিমান দেখা ছিল ওর শখ। ইঞ্জিনের গর্জন ওর ভালো লাগত।

কিন্তু এখন সেই শব্দ শুনলেই আরিয়ান কেঁপে ওঠে। কারণ, গত বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে তার চোখের সামনে ভেঙে পড়ে একটি এয়ার ইন্ডিয়া ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ বিমান। ভিডিও তুলছিল সে, তখনই ঘটে সেই ভয়াবহ ঘটনা।

এই দুর্ঘটনায় বিমানের সব আরোহীসহ মোট ২৪১ জন নিহত হন। প্রায় ৩০ জন মারা যান মাটিতে।

ঘটনার মুহূর্তটি আরিয়ান তার ফোনে ধারণ করেছিল। সেই ভিডিও এখন তদন্তকারীদের মূল সূত্র। ভারতের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসে পড়েছে এক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরিয়ান বলেন, আমি দেখেছি, বিমানটি নিচে নামছিল। এরপর হঠাৎ করেই তা টলমল করে ভেঙে পড়ে।

তার বাবা মাগনভাই আসারি জানান, দুর্ঘটনার পর ছেলে এতটাই ভেঙে পড়েছে যে ফোন ব্যবহারও বন্ধ করে দিয়েছে। “ও খুবই ভীত। ভিডিওটি বন্ধুর কাছে পাঠিয়েছিল, পরে দেখি চারদিকে ছড়িয়ে গেছে। সাংবাদিকেরা ভিড় করছেন আমাদের বাড়িতে, দিনরাত সাক্ষাৎকারের অনুরোধ,” বলেন তিনি।

দুর্ঘটনার দিন দুপুরেই আরিয়ান আহমেদাবাদে এসেছিল বড় বোনের সঙ্গে, যে পুলিশ পরীক্ষার জন্য শহরে আসে। এটাই ছিল আরিয়ানের জীবনের প্রথমবার গ্রামের বাইরে আসা।

দুপুরের খাবার খেয়ে বাবা কাজে যান, আরিয়ান তখন বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভিডিও করছিল। হঠাৎ দেখে, একটি বিমান অস্বাভাবিকভাবে নিচে নামছে। সে বুঝে ওঠার আগেই ঘটে বিপর্যয়।

বিমানটি আহমেদাবাদের মেঘানীনগর এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে বিধ্বস্ত হয়। ধ্বংসস্তূপ, ধোঁয়া ও আগুনে ভরে যায় চারদিক। আতঙ্কিত আরিয়ান বাবাকে ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে বলে, আমি সব দেখেছি বাবা, বিমানটা ভেঙে পড়েছে। ঘটনার পর পুলিশও পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ করে, আরিয়ানের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়।

বর্তমানে গোটা পরিবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। “আমরা শুধু চাই, ছেলে একটু স্বাভাবিক হোক। এখন আর কোনো বিমান দেখতে চায় না ও,” বলেন মিঃ আসারি।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর