সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ ভিডিওচিত্র ২

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের নতুন মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কানাডার আলবার্টায় অনুষ্ঠিত গ্রুপ অব সেভেন (G7) শীর্ষ সম্মেলন থেকে আগেভাগেই দেশে ফিরতে বাধ্য করেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার আশঙ্কা গভীর হওয়ায় ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক জরুরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, ট্রাম্প G7 সম্মেলনের 'পারিবারিক ছবি' তোলা ও নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নৈশভোজে অংশগ্রহণের পরই নির্ধারিত সময়ের একদিন আগে দেশে ফিরবেন।

ইসরায়েলি বাহিনী ইরানের রাজধানী তেহরানে সম্ভাব্য বিমান হামলার পূর্বাভাস দিয়ে সাধারণ জনগণকে শহর ছাড়ার নির্দেশ দিলে পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নেয়। এর কিছুক্ষণ পর ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ একটি পোস্টে বলেন, তেহরান খালি করো। বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাওয়ার পর থেকেই তেহরানজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এই উত্তেজনার মাঝেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দেন, যদি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করা যায়, তাহলে সংঘাতের অবসান ঘটবে।

জটিলতায় পড়ে G7 এর কূটনীতি

ট্রাম্পের আকস্মিক প্রস্থানে G7 আয়োজকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। আয়োজকরা চেয়েছিলেন—মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে আলোচনা করে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করতে, যেখানে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র না রাখার আহ্বান জানানো হতো এবং আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের পক্ষে মত প্রকাশ করা হতো। ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অবশ্যই একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় আসতে হবে।

আমেরিকা ফার্স্ট

ট্রাম্প তার সময়সূচি পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়ে বলেন,

  • আমেরিকা ফার্স্ট মানে অনেক কিছু, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—ইরান কখনো পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। আমেরিকাকে আবার মহান করো!"

  • তিনি আরও জানান, সংকট নিরসনে তিনি আলোচনার মাধ্যমে মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী।

  • তারা চুক্তি করতে চায়, আর আমি এখান থেকে গেলেই আমরা কিছু করব। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে কথা বলাই সবসময় উত্তম, বলেন ট্রাম্প।


ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে শুরুতে বিমান প্রতিরক্ষা, পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক কমান্ড টার্গেট করা হলেও চতুর্থ দিনের মাথায় সংঘাত রূপ নিয়েছে একপাক্ষিক ক্ষয়ক্ষতির যুদ্ধে। জবাবে ইরান ইসরায়েলের সর্বাধিক জনবহুল অঞ্চল—তেল আবিব ও হাইফার মধ্যবর্তী এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সংঘাতে যুক্ত নয়, তবু মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগর থেকে ইউএসএস নিমিৎজ বিমানবাহী রণতরী স্ট্রাইক গ্রুপকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হয়েছে, যেখানে এর আগে থেকেই ইউএসএস কার্ল ভিনসন অবস্থান করছে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ভূমধ্যসাগরে আরও দুটি ডেস্ট্রয়ার মোতায়েন করা হয়েছে এবং মার্কিন বিমানবাহিনীর জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান ইউরোপ হয়ে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে মোতায়েন রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর