টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন নাজমুল হোসেন শান্ত
টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ইনিংস ও ৭৮ রানের বড় ব্যবধানে হারার পর কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
শান্ত বলেন, "আমি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। আমি টেস্ট সংস্করণে আর এই দায়িত্ব পালন করতে চাই না। এটা ব্যক্তিগত কোনো কিছু নয়, পুরোপুরি দলের ভালোর জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি তিনজন অধিনায়ক দলের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে"
তার এই বক্তব্য অনেকেই বিসিবির ‘তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক’ নীতির প্রতি এক ধরনের নীরব প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কা সফরের আগে হঠাৎ করেই ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকে শান্তকে সরিয়ে দিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ নিয়ে শান্তর মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ তৈরি করেছিল বলে ধারণা করা হয়।
নভেম্বর ২০২৩-এ নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে শান্ত বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। তার অধীনে বাংলাদেশ ১৪টি টেস্ট খেলেছে, যার মধ্যে ৪টিতে জয়, ৯টিতে হার এবং ১টি ড্র হয়েছে। তার নেতৃত্বে সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল ২০২৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও শান্ত পিছিয়ে ছিলেন না। টেস্টে তার সামগ্রিক গড় যেখানে ৩২, অধিনায়ক হিসেবে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬-এ। তিনি অধিনায়কত্বকালীন সময়ে ৩টি সেঞ্চুরি ও ২টি ফিফটি করেন।
শান্তর পদত্যাগকে ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা দুইভাবে ব্যাখ্যা করছেন।
অনেকে বলছেন, তিনি দলের ঐক্য রক্ষার কথা ভেবেই সরে দাঁড়িয়েছেন, যাতে ফরম্যাটভেদে নেতৃত্বের বিভাজনে দল ভেতরে বিভক্ত না হয়ে পড়ে।
অনেকের মতে, বিসিবির সিদ্ধান্তে স্পষ্টতা না থাকায় এবং হঠাৎ করে নেতৃত্বের পরিবর্তন করায় শান্তর সঙ্গে বোর্ডের দূরত্ব তৈরি হয়েছে—এটি তার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে।
এখন সবার চোখ বাংলাদেশ টেস্ট দলের নতুন অধিনায়কের দিকে। সবচেয়ে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। সাবেক নির্বাচক হান্নান সরকারও মিরাজকেই এই দায়িত্বের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন। তবে লিটন দাসের নামও সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছে।