সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে এই আদেশ দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব।
অভিযোগের প্রেক্ষাপট
দুদক জানায়, সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক আবুল খায়ের ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারে অবৈধভাবে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা সরকারি বিধি ও পুঁজিবাজার আইন লঙ্ঘন করে অবৈধ পন্থায় এই অর্থ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
গোপন সূত্রে দুদক জানতে পারে, অভিযুক্তরা দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন। ফলে চলমান অনুসন্ধান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় তাদের বিদেশ গমন রোধে আদালতে আবেদন করা হয়।
আদালতের সিদ্ধান্ত
আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে অভিযুক্তদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একইসঙ্গে তাদের পাসপোর্ট জব্দের আদেশও দেওয়া হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়:
“অনুসন্ধান চলাকালে অভিযুক্তদের বিদেশ গমন করলে তদন্তে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে। সেজন্য তাদের বিদেশ যাওয়া রোধ করা জরুরি।”
অভিযুক্তদের তালিকা
দুদকের আবেদনে নাম রয়েছে মোট ১৫ জনের, তাদের মধ্যে রয়েছেন:
সাকিব আল হাসান – সাবেক ক্রিকেটার ও সংসদ সদস্য
আবুল খায়ের – সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক
কাজী সাদিয়া হাসান – আবুল খায়েরের স্ত্রী
আবুল কালাম মাদবর
কনিকা আফরোজ
মোহাম্মদ বাশার
সাজেদ মাদবর
আলেয়া বেগম
কাজী ফুয়াদ হাসান
কাজী ফরিদ হাসান
শিরিন আক্তার
জাভেদ এ মতিন
জাহেদ কামাল
হুমায়ূন কবির
তানভীর নিজাম
সাকিব আল হাসানের ভূমিকা
সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারে অবৈধ বিনিয়োগ এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালেও বেটিং সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবার দুর্নীতির মামলায় তার নাম উঠে আসায় তা নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
দুদকের অবস্থান
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযুক্তরা অবৈধভাবে সম্পদ গড়ে তুলেছেন। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তারা বিনিয়োগে অংশ নেওয়ার কোনো এখতিয়ার রাখেন না, যা আইন লঙ্ঘনের শামিল।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, তদন্তের প্রাথমিক অংশ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন তারা চূড়ান্ত অভিযোগপত্র প্রস্তুতের কাজ করছে।
প্রতিক্রিয়া
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা তদন্তের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক সাকিব-ভক্ত এই পদক্ষেপকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করছেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ
আদালতের আদেশ অনুযায়ী, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তরা বিদেশ যেতে পারবেন না। দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং হবে।