সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ ভিডিওচিত্র ২

২০০০ সালের ২৬ জুন টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে। সেই থেকে আজ ২৫ বছর—রজতজয়ন্তী। এই ঐতিহাসিক মাইলফলক উদযাপনে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), আর এর নেতৃত্বে রয়েছেন সেই ব্যক্তি, যিনি অভিষেক টেস্টেই দেশের প্রথম সেঞ্চুরির গৌরব অর্জন করেছিলেন—আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

টেস্ট মর্যাদার সূচনা

২০০০ সালের ২৬ জুন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বাংলাদেশের পূর্ণ সদস্যপদ অনুমোদন করে। একই বছরের ১০-১৩ নভেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচ। সেই ম্যাচেই আমিনুল ইসলাম বুলবুল ১৪৫ রানের এক মহাকাব্যিক ইনিংস খেলে দেশের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে নাম লেখান।

অভিষেক টেস্টেই বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করে ৪০০ রান—যা ছিল কোনো দলের অভিষেক টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ম্যাচটি পরাজয়ে শেষ হলেও বাংলাদেশ ক্রিকেটের আত্মবিশ্বাস ও সম্ভাবনার বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল বিশ্বদরবারে।

রজতজয়ন্তী উপলক্ষে বিসিবির উদ্যোগ

বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে বিসিবি ঘোষণা করেছে বেশ কিছু ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন:

  • আন্তঃজেলা ক্রিকেট কার্নিভাল: ২২ জুন থেকে দেশের ৬৪ জেলায় একযোগে শুরু হবে অনূর্ধ্ব-১২ বয়সী ছেলে ও মেয়ে ক্রিকেটারদের নিয়ে ক্রিকেট কার্নিভাল।

  • সমাপনী অনুষ্ঠান: ২৬ জুন মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে বর্ণাঢ্য সমাপনী অনুষ্ঠান। এতে জাতীয় দলের বর্তমান ও সাবেক খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

  • স্মৃতিচারণ ও সম্মাননা: অভিষেক টেস্ট দলের সদস্য, কোচিং স্টাফ ও কর্মকর্তাদের বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হবে।

নেতৃত্বে সেই আমিনুল ইসলাম বুলবুল

বর্তমান বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের জন্য এই উদযাপন শুধু একজন প্রশাসকের দায়িত্ব নয়, বরং এক আবেগঘন ব্যক্তিগত অধ্যায়। ক্রিকেটার হিসেবে যাত্রা শুরু করে এখন তিনিই দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক। সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়ে তিনি রজতজয়ন্তী উদযাপনের প্রস্তাব দেন এবং বলেন,
"আমরা ২৫ বছরকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করতে চাই। ক্রিকেট কার্নিভালের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সঙ্গে ঐতিহ্যের সেতুবন্ধ গড়ে তোলা হবে।"

২৫ বছরে অগ্রযাত্রার ছাপ

বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই দীর্ঘ পথচলায় নানা উত্থান-পতনের মধ্যেও বেশ কিছু স্মরণীয় অর্জন স্থান পেয়েছে ইতিহাসে:

  • ২০০৫: প্রথম টেস্ট জয়—চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এনামুল হক জুনিয়রের ৬ উইকেটের মাহাত্ম্যে আসে ঐতিহাসিক বিজয়।

  • ২০১৫: বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ।

  • ২০২০: আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশের যুবারা।

  • ২০২১: নারী ক্রিকেট দল টেস্ট মর্যাদা পায়—নারী ক্রিকেটেও যুক্ত হয় নতুন দিগন্ত।

সামনে এগিয়ে চলার প্রত্যয়

রজতজয়ন্তীর এই আয়োজন শুধু অতীত স্মরণ নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য প্রেরণাও। নতুন প্রজন্মকে ক্রিকেটে আকৃষ্ট করতে বিসিবির এ ধরনের উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আমিনুল বুলবুলের নেতৃত্বে বিসিবির এই আয়োজন বাংলাদেশ ক্রিকেটকে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করছেন অনেকে।

এই ২৫ বছর কেবল একটি সংখ্যাই নয়, এটি সংগ্রাম, সাফল্য ও সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল ইতিহাস। এবার সময়, এই ইতিহাসকে উদযাপনের।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর