শ্রমিকদের বকেয়া ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে পুরান পল্টনে অবস্থান কর্মসূচি
পুরান পল্টনে শ্রম ভবনের সামনে শতাধিক শ্রমিক আজ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ করা হচ্ছে না। এছাড়া, বাজারমূল্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতন বৃদ্ধির জোরালো দাবি জানানো হয়েছে এই অবস্থান থেকে। শ্রমিকরা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
প্রধান দাবিসমূহ:
বকেয়া মজুরি পরিশোধ: শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, গত কয়েক মাস ধরে তাদের বকেয়া মজুরি আটকে রাখা হয়েছে।
বেতন কাঠামো সংশোধন: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে তাল মিলিয়ে বেতন বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে।
মৌলিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ: কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের অভাবের কথাও তুলে ধরেন অনেকে।
শ্রমিকদের বক্তব্য:
একজন শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "দৈনিক 250 টাকায় কীভাবে সংসার চালাব? চাল-ডাল-তেলের দাম আকাশছোঁয়া, অথচ আমাদের বেতন বাড়ছে না। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
"মনে হয়, বর্জুয়ারা (উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা) আমাদের রক্ত-ঘামে অর্জিত টাকা দিয়ে নিজেদের পেট পূড়চ্ছেন।"
অন্য একজন নারী শ্রমিক যোগ করেন, "মাসের পর মাস বকেয়া বেতন পাচ্ছি না। পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা বা সন্তানের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।"
কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া:
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সরকারি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে, অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রেক্ষাপট:
বাংলাদেশের গার্মেন্টস, নির্মাণ ও পরিবহন খাতে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও মজুরি বৈষম্যের ঘটনা নতুন নয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিম্নআয়ের মানুষদের জীবনযাত্রা ক্রমাগত দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শ্রম আইন বাস্তবায়ন এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে সরকার ও নীতিনির্ধারকদের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, আজকের অবস্থান কর্মসূচি সফল না হলে আগামী কয়েক দিনে ধর্মঘট বা রাস্তা অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।