সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ

কিয়েভ, ইউক্রেন: রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কিয়েভের মারিনস্কি প্রাসাদেও নেমে এসেছে অন্ধকার, কিন্তু ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কণ্ঠে নেই কোনো ভয়, আছে ইস্পাত কঠিন প্রত্যয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি শুধু দেশের প্রতিরক্ষা কৌশল নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়েও রাখঢাকহীন মন্তব্য করেছেন।

🇺🇸 'ভয়' নয়, কৌশলগত 'অংশীদারিত্ব'

ট্রাম্পকে নিয়ে তার মন্তব্য ছিল অত্যন্ত সাহসী। জেলেনস্কি সরাসরি বলেন:

"বিশ্বের সবাই ট্রাম্পকে ভয় পায়, এটাই সত্যি। কিন্তু আমি নই।"

জেলেনস্কি এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ইউক্রেন আমেরিকার শত্রু নয়, বরং দীর্ঘদিনের বন্ধু। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক 'কয়েক দশক কিংবা শতাব্দীজুড়ে কৌশলগত অংশীদারিত্বের' ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।

  • ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ: গত অক্টোবরে ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠকটি 'স্বাভাবিক, ব্যবসায়িক ও গঠনমূলক' ছিল। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা চাহিদা এবং মস্কোর সামরিক সক্ষমতা দুর্বল করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

  • গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ: তিনি আমেরিকান জনগণের গণতান্ত্রিক পছন্দকে সম্মান করেন বলেও জানান।

রাজা চার্লসের 'নীরব কূটনীতি' ও সামরিক দাবি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এই সাক্ষাৎকারে ব্রিটেনের রাজা চার্লসের কূটনৈতিক ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে মজবুত করতে রাজা চার্লস নীরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। একই সাথে তিনি উল্লেখ করেন, ট্রাম্পও রাজা চার্লসকে 'খুব সম্মান করেন'।

সামরিক দিক থেকে জেলেনস্কি ইউরোপের কাছে জরুরি আহ্বান জানিয়েছেন:

  • প্যাট্রিয়ট মিসাইল ক্রয়ের পরিকল্পনা: যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে ২৭টি প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জন্য ইউক্রেন পরিকল্পনা তৈরি করেছে।

  • ইউরোপের কাছে ধার: তিনি ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তাদের নিজস্ব প্যাট্রিয়ট সিস্টেমগুলো ইউক্রেনকে সাময়িকভাবে 'ধার' দেওয়ার জন্য।

সামরিক সহায়তার পর্যাপ্ততা নিয়ে তিনি কঠিন সত্য উচ্চারণ করে বলেন, "যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো সহায়তাই যথেষ্ট নয়।"

ইউরোপের প্রতি সতর্কবার্তা

সাক্ষাৎকার চলাকালীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেও, হাসিমুখে পরিস্থিতি সামলে নিয়ে জেলেনস্কি একে কিয়েভের 'বাস্তবতা' বলে উল্লেখ করেন। তবে রাশিয়াকে নিয়ে তার উদ্বেগ স্পষ্ট।

তিনি রাশিয়াকে 'ইউরোপের বিরুদ্ধে হাইব্রিড যুদ্ধ' চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেন এবং সতর্ক করে দেন যে, মস্কো ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালেই ইউরোপের অন্য কোনো দেশে নতুন করে সামরিক হামলা চালাতে পারে। কিয়েভ থেকে দেওয়া এই বার্তা কেবল ইউক্রেনের নয়, বরং গোটা ইউরোপের সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ সংকেত বহন করে।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর