সিনহা হত্যা: প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখল হাইকোর্ট
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলার অপর ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো:সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। এর আগে গত ২৯ মে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে আদালত ২ জুন রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছিলেন।
রায় ঘোষণার পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসীম সরকার গণমাধ্যমকে জানান, আদালত ডেথ রেফারেন্স মঞ্জুর এবং আসামিদের আপিল খারিজ করে প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। একই সঙ্গে অপর ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ও বহাল থাকে। তবে আসামিপক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, হাইকোর্টের রায়ের প্রত্যয়িত অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ রয়েছে। প্রদীপ চাইলে আপিল করতে পারবেন।
যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামিরা
এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ছয় আসামি হলেন:
সাবেক এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত
কনস্টেবল রুবেল শর্মা
কনস্টেবল সাগর দেব
কক্সবাজারের বাহারছড়ার মো. নুরুল আমিন
মোহাম্মদ আইয়াজ
মো. নিজাম উদ্দিন
সিনহা হত্যাকাণ্ড:
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পর ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় ঘোষণা করেন। সেই রায়ে প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামির দণ্ড কার্যকরের আগে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যাকে ডেথ রেফারেন্স বলা হয়। পাশাপাশি আসামিরা বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বা জেল আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও আপিল একসঙ্গেই শুনানি হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিচারিক রায়সহ নথি হাইকোর্টে পৌঁছায় এবং ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। সেই বছরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পৃথকভাবে আপিল ও জেল আপিল করেন।
প্রক্রিয়াগত দিক থেকে মামলার পেপারবুক প্রস্তুত শেষে প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল থেকে শুনানি শুরু হয়ে ২৯ মে শেষ হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসীম সরকার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবনী আক্তার ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ।
আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, এস এম শাহজাহান, শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম ও শফিকুল ইসলাম রিপন