গভীর রাতে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের গোপনে বাংলাদেশ ত্যাগ
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গোপনে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন। বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে তিনি ব্যাংককের উদ্দেশ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিমানবন্দরের একটি দায়িত্বশীল সূত্র।
জানা যায়, রাত আনুমানিক ১১টার দিকে তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় ইমিগ্রেশন কাউন্টারে প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়। সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে দেশ ছাড়ার অনুমতি পান তিনি।
২০১৩ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা আবদুল হামিদ সাম্প্রতিক সময়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে চলমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে গত কয়েক মাস ধরেই তিনি ছিলেন নীরব।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার দাবির মুখে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই দলটির অনেক শীর্ষ নেতা আত্মগোপনে চলে যান। কেউ কেউ দেশ ত্যাগও করেছেন। তবে এতদিন দেশের ভেতরেই অবস্থান করছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধেও আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ সদর থানায় গত ১৪ জানুয়ারি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটিতে আরও উল্লেখযোগ্য কয়েকজন সাবেক সরকারি ব্যক্তিত্বকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তনের সময়কালে এভাবে একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে তাঁর এই প্রস্থানের বিষয়ে সরকার বা তাঁর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
সাবেক রাষ্ট্রপতির ব্যাংকক গমন নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলেও নানা প্রশ্ন উঠছে। অনেকে মনে করছেন, আসন্ন বিচারিক প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক পুনর্গঠনের প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।