উত্তরায় ভয়ংকর অপহরণচক্রের খপ্পরে কলেজছাত্রী, পুলিশের অভিযান
ঢাকার উত্তরা থেকে এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ করে তাঁর নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার একটি ফ্ল্যাট থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা, মাদকদ্রব্য ও অপরাধে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দেওয়া তথ্যমতে, গত সোমবার (তারিখ আনুমানিক ২০ মে), উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্ল্যাটে পূর্বপরিচিত মাসুম পারভেজ নামের এক যুবক কলেজছাত্রীটিকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তার সহযোগীদের সহায়তায় ওই ফ্ল্যাটেই ছাত্রীটিকে আটকে রেখে নগ্ন ভিডিও ও ছবি তোলা হয়।
পরদিন গভীর রাতে ভিডিওচিত্র কলেজছাত্রীর মায়ের মোবাইলে পাঠিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
পুলিশের অভিযান ও উদ্ধার
মেয়েটির মা উত্তরা পশ্চিম থানায় অভিযোগ জানালে, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে। বুধবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে উত্তরার ওই ফ্ল্যাট থেকে ছাত্রীটিকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. মুহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ৬০টি ইয়াবা বড়ি, দুটি সিসি ক্যামেরা ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা
মো. মাসুম পারভেজ (৩৮)
মো. সোলাইমান হোসেন (৩৮)
শফিকুল ইসলাম সৌরভ (২৭)
মোছা. মায়া (২৫)
মোছা. রুলি খানম (১৯)
ডিএমপি জানিয়েছে, এরা সবাই একটি বায়িং হাউসে কর্মরত ছিলেন। তবে সেই প্রতিষ্ঠানের আড়ালেই তারা একটি অপহরণ ও ব্ল্যাকমেইল চক্র গড়ে তোলে। ফাঁদে ফেলে মেয়েদের ভিডিও করে, পরে মুক্তিপণ আদায় করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য।
উদ্ধার হওয়া কলেজছাত্রী ছাড়াও অন্য ভুক্তভোগীদেরও মাদক সেবনে বাধ্য করে, এবং আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে পরিবার ও সমাজে হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করত চক্রটি।
ঘটনার পর উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।