জি এম কাদেরের বাসায় আগুন: আদিখ্যেতা নিয়ে প্রশ্ন এনসিপি নেতার
রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাড়ির সামনে আগুন দেওয়ার ঘটনার পর সেনা তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, একটি পুরোনো বাইকে সামান্য আগুন নিয়ে এত উৎসাহ কিন্তু গত ৯ মাসে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কয়টি অভিযান চালানো হয়েছে?
আজ রোববার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে সারজিস আলম এ বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আমরা এখনো যথেষ্ট সম্মানের জায়গায় রাখি। কিন্তু ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে তাদেরও স্পষ্ট অবস্থান ও কার্যকর ভূমিকা দেখতে চাই।
এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে রংপুর শহরের পায়রা চত্বরে জি এম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ও জেলা আহ্বায়ক ইমরান আহমেদের সঙ্গে কথা বলেন। রাত দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে যোগ দেন সারজিস আলম। কথা বলেন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
বি টিম জাতীয় পার্টি ও রাজনৈতিক দ্বিচারিতা নিয়ে অভিযোগ
সারজিস আলম তাঁর পোস্টে দাবি করেন, সম্প্রতি জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা রংপুরে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সহায়তায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। তিনি লেখেন, রংপুরে একাধিকবারের বিতর্কিত মেয়র মোস্তফা পুনরায় মেয়র হতে চাইছেন। তাঁকে সমর্থন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ জাতীয় পার্টি সেই মিছিলে অংশ নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের সুবিধা ভোগ করছে। বিএনপি ও জামায়াত যখন নির্বাচনে না গিয়ে জুলুম সহ্য করেছে, তখন জাতীয় পার্টি ছদ্ম বিরোধী দলের ভূমিকায় থেকে সরকারকে বৈধতা দিয়েছে।
সারজিস আলম অভিযোগ করেন, জি এম কাদেরের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামীপন্থী শক্তির সহায়তায় জাতীয় পার্টি আবারও মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে।
ঘটনার পটভূমি তুলে ধরে সারজিস আলম জানান, রংপুরের বিভিন্ন বিরোধী দল ও সংগঠন জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অহিংস বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় প্রথম হামলা চালায় জাতীয় পার্টির কর্মীরা। এরপর ঘটনার একপর্যায়ে জি এম কাদেরের বাড়ির সামনে একটি পুরোনো মোটরসাইকেল পোড়ানো হয়।
সারজিস আলম বলেন, বাইক পোড়ানোর ঘটনায় সেনাবাহিনী যে মাত্রায় মাঠে নামে, সেটা দেখে বিস্মিত হতে হয়। অথচ একই সময়ে রংপুরে আওয়ামী দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযান চোখে পড়েনি।
প্রশ্ন রইল নির্বাচন নিয়ে, পক্ষপাত নিয়ে
সারজিস আলম অভিযোগ করেন, গত ৯ মাসে রংপুরে অবৈধ মেয়র মোস্তফার বিরুদ্ধে কতটা তদন্ত হয়েছে? রংপুর সিটি করপোরেশনকে যাঁরা লুটপাটের ক্ষেত্র বানিয়েছেন, তাঁদের ধরতে কয়টা অভিযান চালানো হয়েছে?
ফেসবুক পোস্টে এসব প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, জি এম কাদেরের পুরোনো বাড়ির সামনে আগুন লাগা ঘটনায় অপারেশন চালানো হলেও সুশাসনের জন্য, দুর্নীতির বিরুদ্ধে বা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের নিরাপত্তায় তেমন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
তিনি তাঁর বক্তব্যের শেষাংশে সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, আমরা চাই সেনাবাহিনী দলীয় রাজনীতির বাইরের এক বিশ্বাসযোগ্য শক্তি হিসেবে জনগণের পাশে দাঁড়াক