বখতিয়ার খিলজীর বিজয়ের মাধ্যমেই বাংলাভাষার সুদিন আসে
মুসলিম শাসক বখতিয়ার খিলজীর বাংলা বিজয়ের মাধ্যমে বাংলা ভাষার যে সুদিন সুচিত হয়েছিল পরবর্তী পুর্ণ সুলতানী আমলে তা বহুগুন সমৃদ্ধি অর্জন করে বলে মন্তব্য করেন দারুল আজহার মাদরাসার অধ্যক্ষ ও কথাসাহিত্যিক মনজুরে মওলা। তিনি বলেন, বাংলা সাহিত্যের শৈশব থেকে নিয়ে আধুনিক যুগ পর্যন্ত এর বিকাশ ও উৎকর্ষতায় রয়েছে মুসলমানদের অবদান ও অংশগ্রহণ। বাংলাভাষার আলোকিত অধ্যায় আসে মুসলমানদের আগমন ও রাজ্য শাসনের কারণেই। মুসলিম শাসক বখতিয়ার খিলজীর বাংলা বিজয়ের মাধ্যেমে বাংলা ভাষার যে সুদিন সুচিত হয়েছিল পরবর্তী পুর্ণ সুলতানী আমলে তা বহুগুন সমৃদ্ধি অর্জন করে।"
৩০ অক্টোবর ২০২৫ বৃহস্পতিবার দারুল আজহার মডেল মাদরাসা, সিলেটের উদ্যোগে এডমিন ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে "বাংলা সাহিত্যের বিকাশে মুসলমানদের অবদান" শীর্ষক এসেম্বলীতে প্রধান অতিথির আলোচনায় মাদরাসার প্রিন্সিপাল, লেখক-সাহিত্যিক অধ্যক্ষ মনজুরে মাওলা এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, "মুসলমানদেরকে বাংলা সাহিত্যের বিপরীতে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। যার সপক্ষে কোন প্রমাণিত দলিল-দস্তাবেজ নেই। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, বাংলায় মুসলিম বিজয়ের আগে চর্যাপদের কয়েকটি পঙ্ক্তি ছাড়া সাহিত্যের চর্চা তো দূরের কথা, বাংলা সাহিত্যের কোন নিদর্শনই খুঁজে পাওয়া যায় না। সেন আমলে বাংলা ভাষা ছিল চরম নিন্দিত। এতটাই নিন্দিত যে, এমনকি বাংলা ভাষায় কারো আশীর্বাদ গ্রহণ করাও ছিল শাস্ত্রমতে নিষিদ্ধ। বাংলা চর্চা ও উচ্চারণ এতটাই শাস্তিযোগ্য অপরাধ ছিল যে, হিন্দু ধর্মের পুরান কিংবা রামের জীবনী কেউ বাংলা ভাষায় পাঠ করলে কিংবা শুনলে তার জন্য অবধারিত ছিল নরক। এবং সেই নির্ধারিত নরকের নাম ছিল 'রৌরব'। রাজসভায় বাংলা নিষিদ্ধ করে সেখানকার ভাষা ছিল সংস্কৃত। সুতরাং সংস্কৃতের পন্ডিতেরাই ছিলেন হিন্দু সমাজের কাছে শিক্ষিত। বাংলা উচ্চারণকারীরা ছিলেন হিন্দু রাজাদের দৃষ্টিতে অবাঞ্ছিত। বাংলা বা বঙ্গদেশে বাংলা ভাষার কোন স্থান ছিল না। ছিল উপেক্ষা, অবজ্ঞা আর তাচ্ছিল্য। বাংলাকে সংস্কৃতের পন্ডিতেরা ইতরের ভাষা বলে গালি দিতেন। বাংলা ভাষা যখন কয়েক শত বছর যাবত অস্তিত্বের লড়াইয়ে বিলুপ্তপ্রায়। তখন মুসলিম শাসনামল শুরু হলে বাংলা ভাষা তার জীবনীশক্তি ফিরে পায়।" তিনি শিক্ষার্থীদেরকে ব্যাপক ভাবে বাংলা সাহিত্যের চর্চা ও অনুশীলনে মনযোগী হবার আহবান জানান।
অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন, আল আজহার ছাত্র সংসদের জিএস শামায়েল মাহি। টাইটেল টপিকের উপর বক্তব্য রাখেন মাদরাসার শিক্ষক রিয়াজ উদ্দীন, সাইফুর রহমান সাইফী, জান্নাতুল ফিরদৌস প্রমুখ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখে ইবতেসাম জান্নাত, আলী আকবর প্রমুখ শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা সাবজেক্টিভ স্পীচ, হামদ-নাত, ইংরেজি, আরবী ডায়লগ ইত্যাদি বিষয়ে পারফরম্যান্স করে।
