সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রস্তাবিত 'মানবিক করিডোর' চুক্তি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটি বলেছে, দেশের নিরাপত্তা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা জড়িত—এমন কোনো বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া সিদ্ধান্ত নেয়, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এই কথা জানান হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী এবং মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। বিবৃতিটি পাঠান হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।

প্রস্তাবিত করিডোর কী?

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘর্ষের কারণে লাখো মানুষ মানবিক সংকটে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু পশ্চিমা শক্তি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় একটি তথাকথিত "মানবিক করিডোর" গঠনের প্রস্তাব উঠে এসেছে। এই করিডোরের মাধ্যমে সংঘাত কবলিত অঞ্চলে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, এই করিডোর ব্যবহার করে আরাকান আর্মির মতো সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী উপকৃত হতে পারে। তাদের শক্তি বৃদ্ধি রোহিঙ্গা সমস্যা জটিলতর করতে পারে এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

হেফাজতের আশঙ্কা ও অবস্থান

হেফাজতে ইসলাম বিবৃতিতে বলেছে, “এই উদ্যোগ কেবল মানবিক সহায়তার মোড়কে উপস্থাপিত হলেও এর অন্তর্নিহিত লক্ষ্য অনেক বেশি জটিল এবং আশঙ্কাজনক। এর মাধ্যমে আরাকান আর্মিসহ সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো উপকৃত হতে পারে, যা বাংলাদেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।”

তারা আরও বলেছে, “জাতীয় পরামর্শ, রাজনৈতিক ঐকমত্য ও সংসদীয় আলোচনাবিহীন কোনো সিদ্ধান্ত, বিশেষত যা দেশের নিরাপত্তা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলে, আমরা তা কোনোভাবেই গ্রহণ করব না।”

সরকারকে জবাবদিহির আহ্বান

বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, প্রস্তাবিত করিডোর নিয়ে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সরকার বা বেসরকারি কোনো পক্ষ আলোচনা চালিয়েছে কি না। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তা জাতির সামনে স্পষ্টভাবে উপস্থাপনের আহ্বান জানায় হেফাজত।

সংগঠনটি সরকারের প্রতি সতর্ক করে বলেছে, “এই ধরনের ইস্যুতে কোনো গোপন চুক্তি বা আলোচনা হলে সেটি শুধু গণবিরোধী নয়, বরং দেশের নিরাপত্তা ও ইসলামী মূল্যবোধেরও পরিপন্থী।”


✍️ সংক্ষিপ্তসার (Summary):

হেফাজতে ইসলাম রাখাইন করিডোর চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, এ ধরনের উদ্যোগে রাজনৈতিক ঐকমত্য না থাকলে তা দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।


আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর