কে এই শাইখুল হাদিস হাফেজ আহমদুল্লাহ
প্রারম্ভিক জীবন ও জন্মস্থান
মুফতি হাফেজ আহমাদুল্লা ১২ই মে ১৯৪১ ( ১৪ রবিউল ছানি, ১৩৬১ হিজরি) তারিখে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার নাইখাইন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ইসা।
ধর্মীয় শিক্ষা ও পড়াশোনা
শৈশব থেকেই পরিবার থেকে ধর্মীয় শিক্ষা শুরু করেন। সাত বছর বয়সে পিতার কাছ থেকে শুরু করে কোরআন নাজেরা শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৪৮ সালে আল জামিয়াতুল আরাবিয়াতুল ইসলামিয়া জিরি মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে ভর্তি হন। মাত্র ১০ বছর বয়সে (১৯৫১ সালে) তিনি হিফজ কোরআান মুখস্থ করেন এবং এরপর কিতাব বিভাগে শিক্ষা শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে ( ২১ বছর বয়সে) তিনি 'দাওরা-হাদীস' সমাপ্ত করেন। উচ্চতর পড়াশোনার জন্য পাকিস্তানে যান, লাহোরের জামিয়া আশরাফিয়া সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাদীস, ফতোয়া সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন।
কর্মজীবন ও দায়িত্ব
১৯৬৮ সালে দেশে ফিরে এলেন এবং আল জামিয়াতুল আরাবিয়াতুল ইসলামিয়া জিরি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে আল-জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ায় যোগদান করেন। তিনি ''কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে আঞ্জুমানে ইওেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ'' এর সহ- সভাপতি ছিলেন।
কৃতিত্ব ও অবদান
তিনি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আলেমদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করে ''মাশায়েখে চাটগামী নামে দুই খন্ডের একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচিত অন্যান্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে: যুগোপযোগী দশ দশ মাসায়েল (আরবি) মাযহাব ও মাযহাবের প্রয়োজনীয়তা, তাসকীনুল খাওয়াতীর, মহিমান্বিত রমজান, মাসায়েলে রমজান ইত্যাদি। সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে আছে "গায়রে মুকাল্লিদের ইন্টারভিউ-১"।
ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বিষয়
ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক দিক থেকেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ফতোয়া দেওয়া ও ইসলামি আইন (ফিকহ) বিষয়ক গবেষক ও বক্তৃতায় তার অবদান রয়েছে।
মৃত্যু
হাফেজ আহমদুল্লাহ ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে মারা যান।
উপসংহার
মুফতি হাফেজ আহমদুল্লাহ ছিলেন বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য ইসলামি আলেম, যিনি শুধু ধর্মীয় শিক্ষায় প্রসারই ঘটাননি, বরং ফিকহ, হাদীস, বই রচনা ও সামাজিক বিধানেও অবদান রেখেছেন। তার জীবন থেকে শেকার বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নিষ্ঠা, অধ্যবসায়, নিয়মানুবর্তিতা, ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্বের প্রতিফলন।
