বাল্যবিবাহ হতে মুক্তি নেই
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, পোশাকশিল্পে কাজ করা নারীদের মাঝে ৬৬ শতাংশের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ১৮ বছরের পূর্বে। বাংলাদেশে এখনও সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানের জন্য বাল্যবিবাহ একটি সাধারণ চিত্র। পরিবারগুলোর ধারণা, মেয়েদের অল্পবয়সে বিয়ে দিয়ে দিলে সামাজিক সম্মান রক্ষা পায়। অনেক সময় আর্থিক দায়ভার কমানোর জন্যও অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষার ঘাটতি, দারিদ্র্য ও কুসংস্কার বাল্যবিবাহকে টিকিয়ে রেখেছে। যেসব মেয়ে শহরে এসে পোশাক কারখানায় কাজ করছে, তাদের বেশির ভাগই নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। অল্পবয়সেই সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাদের উপর। তারা পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ের পিঁড়িতে বসে তাড়াতাড়ি ইচ্ছার বিরুদ্ধে। ফলাফল ১৮ বছরের পূর্বেই তাদের মাতৃত্ব, সংসার, কাজের চাপের দায়িত্ব নিতে হয়। জরুরি গর্ভনিরোধক বড়ি সম্পর্কে
ধারণা ছিল মাত্র ১৫ শতাংশ নারীর। গবেষণার শেষে তা দাঁড়ায় ৩৯ শতাংশে। গবেষণার শুরুতে যেখানে কমপক্ষে ৪৮ শতাংশ শ্রমিক কাজের স্থানে মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন, গবেষণার শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫ শতাংশে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পোশাকশিল্প নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা দিলেও সামাজিক মানসিকতা পরিবর্তন না হলে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা কঠিন হবে।
৬৬ শতাংশ পোশাকশিল্পী ১৮ বছরের পূর্বেই বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরিসংখ্যান কেবলমাত্র একটি সংখ্যা নয়, এটি হাজারো নারীর অসমাপ্ত স্বপ্নের গল্প।
বাল্যবিবাহ বন্ধ করা গেলে শুধুমাত্র নারীরাই নয়, দেশের অর্থনীতি ও সমাজ আরও শক্তিশালী হবে।