সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ

সোনার বাজারে এখন যেন আগুন লেগেছে। দাম বাড়তে বাড়তে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। ভাবা যায়, ২২ ক্যারেট সোনার এক ভরির দামই এখন ২ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে! মাত্র দুই বছরের মধ্যে দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেল।

এর পেছনের কারণগুলো কমবেশি সবারই জানা। বিশ্বজুড়ে একটা অর্থনৈতিক টালমাটাল অবস্থা চলছে, তার ওপর যোগ হয়েছে যুদ্ধ-বিগ্রহ। মানুষ এখন ডলারের ওপরও ঠিক ভরসা রাখতে পারছে না। সব মিলিয়েই সোনার দাম এভাবে হু হু করে বাড়ছে।

ব্যাপারটা হলো, যখনই বিশ্বে বড় কোনো সংকট আসে—তা করোনা মহামারি হোক বা রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিনের যুদ্ধ—মানুষ তখন টাকা-পয়সা বা অন্য কিছুর চেয়ে সোনাকেই সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ বলে মনে করে। স্বাভাবিকভাবেই, যখন চাহিদা বাড়ে, দামও বেড়ে যায়।

তবে এবারের পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। সাধারণত ডলারের দাম বাড়লে সোনার দাম কমার কথা, কিন্তু এখন ডলার আর সোনা—দুটোর দামই একযোগে বাড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মানুষ ডলারের ওপর থেকেও আস্থা হারাচ্ছে। আবার, দেশে যে হারে মূল্যস্ফীতি বা জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তাতে টাকার মান কমে যাচ্ছে। তাই মানুষ হাতে টাকা না রেখে সেই টাকায় সোনা কিনে রাখছে। এর সাথে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। ওরাও নিজেদের রিজার্ভ বাড়াতে প্রচুর পরিমাণে সোনা কিনছে, যা দাম আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

আরেকটা ব্যাপার হলো, আমাদের দেশে সোনার দাম ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব বা দুবাইয়ের মতো দেশগুলোর চেয়েও বেশি। এ বিষয়ে জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বলছে যে, আমাদের দেশে মূলত 'রিসাইকেল গোল্ড' বা পুরোনো সোনা দিয়েই কাজ চালানো হয়, এ কারণে দামে কিছুটা তফাৎ হয়ে থাকে।

দুঃখের বিষয় হলো, বিশেষজ্ঞরা বলছেন—এই দাম কমার কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। বরং তাঁদের আশঙ্কা, বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। অবাক করা বিষয় হলো, এত দাম বাড়ার পরেও বাজারে কিন্তু ক্রেতা কমেনি। আসলে এখন সোনা কিনছেন মূলত বিনিয়োগকারীরা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সেসব পরিবার, যাদের সামনে বিয়ে-শাদির মতো অনুষ্ঠান আছে।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর