বাটাকে হারিয়ে অ্যাপেক্স শীর্ষে—কিন্তু মুনাফায় কেন এত পিছিয়ে?
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) স্থানীয় জুতা প্রস্তুতকারক অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ব্যবসায় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বাটা শুকে পেছনে ফেলেছে। অ্যাপেক্স ওই প্রান্তিকে রাজস্ব আয় করেছে ৫৪০ কোটি টাকা, যেখানে বাটার আয় ছিল ৩৫৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে অ্যাপেক্স ১৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ৫১ শতাংশ বেশি ব্যবসা করেছে।
তবে রাজস্বে এগিয়ে থাকলেও মুনাফার হিসাবে চিত্রটি একেবারেই উল্টো। অ্যাপেক্সের মুনাফা যেখানে মাত্র ৯৭ লাখ টাকা, সেখানে বাটা শু মুনাফা করেছে ৩৭ কোটি টাকা—অর্থাৎ অ্যাপেক্সের তুলনায় ৩৬ কোটিরও বেশি।
বাটার ৩৫৮ কোটি টাকার আয়ের বিপরীতে উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৯৫ কোটি টাকা, অর্থাৎ ৫৪ শতাংশ। আর অ্যাপেক্সের ৫৪০ কোটি টাকার আয়ের বিপরীতে খরচ হয়েছে ৪১৪ কোটি টাকা—৭৭ শতাংশ। এই ব্যবধান স্পষ্টভাবে প্রভাব ফেলেছে মুনাফায়।
বাটার প্রতি ১০০ টাকার আয়ে খরচ: ৫৪ টাকা
অ্যাপেক্সের প্রতি ১০০ টাকার আয়ে খরচ: ৭৭ টাকা
সুদের বোঝাতেও পিছিয়ে অ্যাপেক্স
অ্যাপেক্সের আরেকটি বড় খরচ হয়েছে ব্যাংকঋণের সুদে। প্রথম প্রান্তিকে অ্যাপেক্স সুদ বাবদ খরচ করেছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা, যেখানে বাটার সুদ খরচ ছিল মাত্র ৬ কোটি টাকা।
অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কাজুরি বলেন: আমাদের উৎপাদন খরচ বেশি, কারণ সব পণ্য নিজস্ব কারখানায় তৈরি হয় এবং আউটলেটগুলো পরিচালিত হয় নিজস্ব কর্মীদের মাধ্যমে। আমরা পণ্যের মানে কোনো আপস করি না।
তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচামালের মূল্য ও ডলার বিনিময় হারের উর্ধ্বগতিও খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে, তবে পণ্যের দাম সেই তুলনায় তেমন বাড়েনি।
বার্ষিক প্রতিবেদনেও একই চিত্র
অ্যাপেক্স (২০২৩–২৪ অর্থবছর):
আয়: ১,৪৯৮ কোটি টাকা
মুনাফা: ১৮ কোটি টাকা
বাটা (২০২৩ সাল):
আয়: ৯৮৮ কোটি টাকা
মুনাফা: ৪০ কোটি টাকা
অ্যাপেক্সের ১০০ টাকার আয়ে খরচ হয়েছে ৭০ টাকা, যেখানে বাটার খরচ ছিল ৫৪ টাকা।