সর্বশেষ আন্তর্জাতিক রাজনীতি অর্থনীতি দেশ

গুয়াকিল, ইকুয়েডর: অপরাধী গ্যাংগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের শিকার হয়ে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর আবারও এক ভয়াবহ গণহত্যার সাক্ষী হলো। গুয়াকিলের কাছে অবস্থিত বন্দর শহর মাচালার কারাগারে দু'দিন ধরে চলা সহিংস দাঙ্গায় কমপক্ষে ৩১ জন বন্দি নৃশংসভাবে নিহত হয়েছেন। এটি কেবল একটি কারাগারের ঘটনা নয়, এটি প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়ার প্রশাসনের সামনে মাদক পাচারকারী মাফিয়াদের বাড়তে থাকা চ্যালেঞ্জের এক চরম প্রকাশ।

শ্বাসরোধ, ফাঁসি, নৈরাজ্য: কারাগারের বিভীষিকা

রোববার (৯ নভেম্বর) শুরু হওয়া এই দাঙ্গা দ্রুত এক নিয়ন্ত্রণের বাইরের পরিস্থিতিতে রূপ নেয়। দেশটির কারা সংস্থা (SNAI) জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২৭ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে অত্যন্ত নৃশংসভাবে—হয় শ্বাসরোধে, নয়তো ফাঁসিতে ঝুলে, যা নির্দেশ করে কারাগারের অভ্যন্তরে কতটা বর্বরতা চলছে।

  • সংঘর্ষের কারণ: দাঙ্গার মূল কারণ ছিল বন্দিদের একটি নতুন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার অধীনে স্থানান্তরের সরকারি প্রচেষ্টা। এটি গ্যাংগুলোর বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণ কাঠামোকে ভেঙে দেওয়ার প্রচেষ্টার ফল।

  • স্থানীয়দের আতঙ্ক: কারাগারের দেয়াল পেরিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা টানা গুলিবর্ষণ, বিস্ফোরণের শব্দ এবং সাহায্যের জন্য চিৎকার শুনতে পেয়েছেন, যা কারাগারটিকে একটি অঘোষিত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছিল।

দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও, এই হামলার প্রভাব সুদূরপ্রসারী।

দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক সঙ্কট

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইকুয়েডরের কারাগারে গ্যাংভিত্তিক সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তার এবং মাদক পাচারের পথ নিয়ন্ত্রণের জন্য একে অপরের সঙ্গে নিয়মিত সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট নোবোয়ার প্রশাসন, যারা অপরাধের বিরুদ্ধে 'শূন্য সহনশীলতা' নীতি নিয়েছে, তাদের জন্য এই হত্যাকাণ্ড এক বড় ধাক্কা। গত সেপ্টেম্বরেও একই কারাগারে ১৪ জন এবং পরে অন্য একটি কারাগারে ১৭ জন বন্দি নিহত হন।

মাচালা কারাগারের এই গণমৃত্যু স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—সরকার চেষ্টা করলেও, মাফিয়াদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক এখনও কারাগারের অভ্যন্তরেই কার্যকর। এই সংকট কেবল ইকুয়েডরের নয়, এটি দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য এক গভীর হুমকি।

আরও পড়ুন...

জনপ্রিয়

সর্বশেষ খবর