স্বপ্ন এক রহস্যময় জগত
স্বপ্ন এক রহস্যময় জগত
স্বপ্ন এক রহস্যময় জগত । এ জগত নিয়ে কাজ করা বিরাট বড় ভাগ্যের ব্যাপার । স্বপ্ন সম্পর্কে নবী করীম-এর একাধিক হাদিস আছে । আমি কয়েকটি সহীহ হাদিস তুলে ধরছি:
রাসূলুল্লাহ বলেছেন: "স্বপ্ন তিন প্রকারের হয়: আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ, শয়তানের পক্ষ থেকে ভীতি প্রদর্শন, মানুষের মনের কল্পনা ।" (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২২৬৩)
নবী বলেছেন: "যখন তোমাদের কেউ ভাল স্বপ্ন দেখে, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে । সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে এবং তা যার কাছে পছন্দ করে তার কাছে বর্ণনা করে ।" (সহীহ বুখারী, হাদিস: ৬৯৮৫)
নবী বলেছেন: "যখন কেউ অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখে, তা শয়তানের পক্ষ থেকে । সে যেন আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে এবং বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলে (শুকনা ভাবে ফুঁ দেয়) , তখন তা কোন ক্ষতি করতে পারবে না । আর সে যেন এ স্বপ্ন কারো কাছে প্রকাশ না করে ।" (সহীহ বুখারী, হাদিস: ৬৯৯৫; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২২৬১)
রাসূলুল্লাহ বলেছেন: "যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখেছে, সে আমাকে সত্যিই দেখেছে । কারণ শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না ।" (সহীহ বুখারী, হাদিস: ৬৯৯৪; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২২৬৬)
ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে, তা বর্ণনা করা যায় । খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে, কারো কাছে বলবে না; আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইবে ।
অপর এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ স্বপ্নকে নবুওয়াতের একটি অংশ বলেছেন । সহীহ হাদিসে এসেছে: নবী করীম বলেছেন: "সৎ স্বপ্ন হলো নবুওয়াতের ছয়চল্লিশ ভাগের একটি ভাগ ।" (সহীহ বুখারী, হাদিস: ৬৯৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদিস: ২২৬৩) নবুওয়াত (পয়গম্বরী) শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু সৎ স্বপ্ন এখনো রয়ে গেছে । সৎ স্বপ্ন মুমিনের জন্য সুসংবাদ । নবী -এর সময়ে ওহীর একটি ধরন ছিল সৎ স্বপ্ন । অর্থাৎ সৎ/সত্য স্বপ্ন হলো নবুওয়াতের ৪৬ ভাগের ১ ভাগ । সুতরাং স্বপ্ন নিয়ে মানুষের সীমাহীন আগ্রহ উদ্দীপনা থেকেই মূলতঃ এ বিষয়টি ধীরে ধীরে অবতারণা করা । স্বপ্নের ব্যাখ্যার পথিকৃৎ বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন রহঃ ছিলেন স্বপ্নের ব্যাখ্যার পথিকৃৎ । তার রচিত
"তাফসীর আহলাম" শত শত বছর যাবত বিশ্বব্যাপী সমাদৃত । আমরা আমাদের পাঠকদের জন্য তাঁর বিরচিত তাফসিরল আহলাম থেকে ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করব ইনশাআল্লাহ ।
স্বপ্নের বিভিন্ন দর্শনের ব্যাখ্যা (তাফসীর আহলাম থেকে)
আল্লাহ পাকের দিদার (সাক্ষাৎ)
ইমাম আব্দুল গণী নাবলুসি রহ: লেখেন, তিনি তুলনাহীন উপমারহিত । তবে সৌভাগ্যবানরা তাঁর সাক্ষাত লাভ করে থাকেন । হযরত ইমাম আবু হানিফা রহ: ১০০ বার স্বপ্নে আল্লাহ পাককে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন । তবে জাগ্রত অবস্থায় শুধুমাত্র আমাদের মহানবী সা: এ বিরল সৌভাগ্য অর্জন করেন ।
ইমাম সাইয়্যেদ আব্দুল গণী নাবলুসি রহ: বলেন, আল্লাহ পাককে দেখার বিভিন্ন অবস্থা হতে পারে । যেইপমাহীন, সীমারেখে পরিমাপ আকৃতিমুক্ত তাঁর প্রভাব প্রতিপত্তি দেখে এটা তাঁর জন্যকল্যান বয়ে আনবে । এর ফল:দুনিয়ায় সুসংবাদ পরকালে নিরাপদ থাকার দলিল ।
আল্লাহর নূর দেখা
এর ফল:
জান্নাত লাভ হবে
বন্দী থেকে স্বাধীন হবে
আমল ভালো হবে
উভয় জগতে শান্তি অর্জন হবে
আল্লাহর থেকে উদ্দেশ্য অর্জন হবে
সুস্থ হবে
বিপদ কেটে যাবে
নবীদের দেখা
নবীদের খুশি অবস্থায় দেখলে দুনিয়ায় সম্মান মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে , নবীদের সাক্ষাত অর্জন হবে ।
আর যদি রাগান্বিত অবস্থায় দেখে তাহলে এর উল্টো হবে ।
ইসরাফিল আ: কে দেখা
স্বপ্নদৃষ্টার দ্বীন দুনিয়ার জন্য সীমাহীন কল্যানের কারণ হবে ।
ওলী আউলিয়াদের দর্শন
সুসংবাদ ও চমৎকার ভবিষ্যতের নিদর্শন ।
আবদালদের দর্শন
অত্যাধিক নেকি অর্জন ও দোজাহানের কল্যান লাভ ।

0 মন্তব্য রয়েছে