সংসারকথা-০১
জীবনের সুখ-শান্তি কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তর এক শব্দেই বলা যায়—পারিবারিক সুখই প্রকৃত সুখ।
ঘরের রমণীর কোমলতা ও সহজতা যতটা একজন পুরুষের জীবনকে রাঙিয়ে তোলে, এর চেয়ে বড় নিয়ামত পুরুষজীবনে আর কিছু নেই। এটাই মহাসত্য। আটলান্টিক মহাসাগরের পূর্ব থেকে পশ্চিমে, দক্ষিণ থেকে উত্তরে—সর্বত্রই এই সত্য অক্ষয়।
সুশোভিত জীবন বলতে একে-ই বোঝানো হয়।
তদ্রুপ, এক নারীর জীবনেও স্বর্গীয় সুখ, শান্তি ও আনন্দ বয়ে আনে পুরুষের মায়া ও ভালোবাসা। তবে এই পথ যতটা মধুময়, ততটাই ভঙ্গুরও বটে। যেন গভীর অরণ্যে আমাবস্যা রাতে কাঁটাবেষ্টিত ভয়ংকর এলাকায় বিছানো সদ্য পিচঢালা পথ—যে পথে দিনের বেলাতেও সঙ্গীসহ চলতে গা ছমছম করে, সেখানে নিশি রাতে একা পার হওয়া কল্পনাতীত।
একজন বিশ্বাসী ও আত্মবিশ্বাসী সঙ্গীর হাত ধরেই এ পথচলা নিরাপদ ও নির্ভয় হয়। গাছ থেকে ঝরে পড়া একটি পাতার আওয়াজও তখন অন্তর কাঁপিয়ে দেয়, চোখে তারা চমকায়, শ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু হওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেখানে শিয়ালের ডাক, বাঘের গর্জন ও প্রবল ঝড়ের গর্জনে এ পথ পার হওয়ার একমাত্র অবলম্বন—বিশ্বাসের শক্ত হাতের মুষ্টি।
শক্ত করে সেই হাত ধরে ভয়কে জয় করে সামনে এগিয়ে চলাই মুক্তির পথ। একে অপরকে সাহস জুগিয়ে অদম্য বিশ্বাস নিয়ে এই পথ অতিক্রম করাই বিচক্ষণতার পরিচায়ক।
সঙ্গীর সামান্য অস্বস্তি বা ক্লান্তিও এই যাত্রাকে অনিশ্চিত করে তুলতে পারে—যা কেবল ভুক্তভোগীই বুঝতে পারে।
অসুস্থতার কোলে ঢলে পড়লে তখন দুর্বোধ্যতা বা অনিশ্চয়তার প্রশ্ন থাকে না; থাকে মৃত্যুর জন্য সময় গোনার অপেক্ষা। সমশক্তিতে উভয়ে এগিয়ে যাওয়াই মুক্তিকে ত্বরান্বিত করে; সহজতা তখন গতি পায়। ভালোবাসা, বিশ্বাস ও আন্তরিকতাই হলো এ যাত্রার জ্বালানি শক্তি।
পূর্ণোদ্যমে, দুর্বার গতিতে, মনের আনন্দে গল্পে গল্পে পথ পার হওয়াই প্রকৃত সুখ। তখন এ পথচলা হয় রোমাঞ্চকর ও মুগ্ধকর; প্রতিটি মুহূর্ত হয়ে ওঠে উপভোগ্য ও মধুময়।
সংসার জীবনের বন্ধুর পথে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন ও এর সমাধান নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে লিখব বলে আশা রাখি। আল্লাহ তায়ালা সহায় হোন।
-মেডিকেল স্টুডেন্ট
বিশকেক, কিরগিজস্তান

0 মন্তব্য রয়েছে